বহালকরণপত্র (Confirmation Deed) দলিল কি? এবং বহালকরণপত্র দলিল এর রেজিস্ট্রেশন ফিস সর্ম্পকে জানতে নিচের লেখাটি পড়ুন।
রেজিস্ট্রিকৃত কোন দলিলে স্বত্ব বা মালিকানার আইনগত কোন ত্রুটি থাকলে, উক্ত ক্রটি নিরসনকল্পে পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট পক্ষ বা তার উত্তরাধিকারী কর্তৃক দলিল সম্পাদনের মাধ্যমে পূর্বোক্ত রেজিস্ট্রিকৃত দলিলকে স্বীকৃতি প্রদান করা হলে, সেরূপ দলিলকে দলিল বহালকরণপত্র বা কনফার্মমেশন। দলিল বলে। এক্ষেত্রে রেজিস্ট্রিকৃত দলিলের মাধ্যমে প্রথমোক্ত দলিলটির স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। দলিল-সংশ্লিষ্ট সম্পত্তির মালিকানার প্রমাণস্বরূপ দ্বিতীয় দলিলটি অর্থাৎ বহালকরণপত্র গ্রহণযোগ্য। যেমন- নাবালকের কার্যত: অভিভাবক কর্তৃক দলিল সম্পাদিত হলে পরবর্তী পর্যায়ে উক্ত নাবালক সাবালক হয়ে সংশ্লিষ্ট সম্পত্তি নিষ্কণ্টক করার জন্য এরূপ দলিল সম্পাদন করতে পারে।
বহালকরণপত্র দলিল এর রেজিস্ট্রেশন ফিস:
১। রেজিস্ট্রেশন ফিঃ ১০০ টাকা (ই ফি)।
২। স্ট্যাম্প শুল্কঃ ২০০ টাকা।
৩। স্থানীয় সরকার করঃ প্রযোজ্য নয়।
৪। উৎসে আয়কর (53H): প্রযোজ্য নয়।
৫। উৎসে আয়কর (53FF): প্রযোজ্য নয়।
৬। মূল্য সংযোজন কর (VAT): প্রযোজ্য নয়।
৭। ই ফিঃ ১০০ টাকা।
৮) এন ফিঃ
(ক) বাংলায় প্রতি ৩০০ শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা উহার অংশ বিশেষের জন্য ১৬ টাকা।
(খ) ইংরেজি ভাষায় প্রতি ৩০০ শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা উহার অংশ বিশেষের জন্য ২৪ টাকা।
৯) এনএন ফি (নকলনবিশগনের পারিশ্রমিক):
(ক) বাংলায় প্রতি ৩০০ শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা উহার অংশ বিশেষের জন্য ২৪ টাকা।
(খ) ইংরেজি ভাষায় প্রতি ৩০০ শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা উহার অংশ বিশেষের জন্য ৩৬ টাকা।
১০) হলফনামাঃ ২০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে হলফনামা প্রিন্ট করে দলিলের সাথে সংযুক্ত করতে হবে।
১১) কোর্ট ফিঃ প্রযোজ্য নয়।
ফিস পরিশোধ পদ্ধতিঃ
দলিল রেজিস্ট্রেশনের জন্য যাবতীয় ফিসাদি স্থানীয় সোনালী ব্যাংক এর ট্রেজারি শাখায় জমা প্রদান করতে হবে।
১। রেজিস্ট্রেশন ফি + ই ফি + এন ফি একসাথে একটি পে-অর্ডারের মাধ্যমে কোড নং ১-২১৬১-০০০০-১৮২৬ তে জমা প্রদান করতে হবে।
২) স্ট্যাম্প শুল্ক (দলিলে ব্যবহৃত স্ট্যাম্প বাদে) পে-অর্ডারের মাধ্যমে কোড নং ১-১১০১-০০২০-১৩১১ তে জমা প্রদান করতে হবে। দলিলে সর্বোচ্চ ১২০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প ব্যবহার করা যাবে।
৩) এনএন ফি নগদে অফিসে জমা প্রদান করতে হবে।
বিশেষ দ্রষ্টব্য
১) The Stamp Act-1899, Rule-5. (Any instrument comprising or relating to several distinct matters shall be chargeable with the aggregate amount of the duties with which separate instruments, each comprising or relating to one of such matters, would be chargeable under this Act.)
১। রেজিস্ট্রেশন ফিঃ (ক) দলিলে লিখিত সম্পত্তির মূল্য ৪,০০০ টাকা পর্যন্ত হলে – মূল্যের ১%, তবে সর্বনিম্ন ১০০ টাকা। (খ) দলিলে লিখিত সম্পত্তির মূল্য ৪,০০০ টাকার বেশি হলে – ২,৫০০ টাকা।
২। স্ট্যাম্প শুল্কঃ দলিলে সম্পত্তির প্রদর্শিত মূল্যের সমপরিমান অংক বা মূল্যের ২% টাকা (স্ট্যাম্প আইনের ১ নম্বর তফশিলের ৬৪(এ))
৩। স্থানীয় সরকার করঃ দলিলে লিখিত মোট মূল্যের ৩% টাকা তবে সিটি কর্পোরেশন এবং ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড (উপজেলাধীন নয়) এর অধীন সম্পত্তি হলে হস্তান্তরিত সম্পত্তির দলিলে লিখিত মোট মূল্যের ২% টাকা।
৪। উৎসে কর বা উৎসে আয়কর (৫৩ H)
ক) নিম্নলিখিত বাণিজ্যিক এলাকায় অবস্থিত ভূমি অথবা ভূমিসহ বিল্ডিং এর ক্ষেত্রে উৎসে করের হার:
বাণিজ্যিক এলাকার নাম
কাঠা (১.৬৫ শতাংশ) প্রতি করের হার
০১। ঢাকা জেলার গুলশান, বনানী, মতিঝিল, দিলকুশা, নর্থ সাউথ রোড, মতিঝিল সম্প্রসারিত এলাকা এবং মহাখালী
দলিল মূল্যের উপর ৪% অথবা ১০,৮০,০০০/- টাকা এর মধ্যে যাহা বেশি তাহা
০২। ঢাকা জেলার কাওরান বাজার
দলিল মূল্যের উপর ৪% অথবা ৬,০০,০০০/- টাকা এর মধ্যে যাহা বেশি তাহা
০৩। চট্টগ্রাম জেলার আগ্রাবাদ ও সিডিএ এভিনিউ
দলিল মূল্যের উপর ৪% অথবা ৩,৬০,০০০/- টাকা এর মধ্যে যাহা বেশি তাহা
০৪। ঢাকা জেলার বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, বাড্ডা, সায়েদাবাদ, পোস্তগোলা, গেন্ডারিয়া এবং নারায়ণগঞ্জ
দলিল মূল্যের উপর ৪% অথবা ৩,৬০,০০০/- টাকা এর মধ্যে যাহা বেশি তাহা
০৫। ঢাকা জেলার উত্তরা- সোনারগাঁও জনপথ, শাহবাগ, পান্থপথ, বাংলা মোটর ও কাকরাইল
দলিল মূল্যের উপর ৪% অথবা ৬,০০,০০০/- টাকা এর মধ্যে যাহা বেশি তাহা
০৬। ঢাকা জেলার নবাবপুর ও ফুলবাড়িয়া
দলিল মূল্যের উপর ৪% অথবা ৩,০০,০০০/- টাকা এর মধ্যে যাহা বেশি তাহা
তবে শর্ত থাকে যে, যদি ভূমির উপর কোন স্থাপনা, বিল্ডিং, ফ্ল্যাট, এপার্টমেন্ট অথবা ফ্লোর স্পেস বিদ্যমান থাকে তাহা হইলে স্থাপনার উপর প্রতি বর্গমিটার ৬০০ টাকা অথবা স্থাপনা, বিল্ডিং, ফ্যাট, এপার্টমেন্ট অথবা ফ্লোর স্পেস এর মূল্যের উপর ৪%, ইহার মধ্যে যাহা বেশি সেই হারে অতিরিক্ত কর পরিশোধযোগ্য হইবে ।
খ) নিম্নলিখিত এলাকায় অবস্থিত ভূমি অথবা ভূমিসহ বিল্ডিং এর ক্ষেত্রে উৎসে করের হার:
বাণিজ্যিক এলাকার নাম
কাঠা (১.৬৫ শতাংশ) প্রতি করের হার
০১। ঢাকা জেলার উত্তরা (সেক্টর ১-৯), খিলগাঁও পুনর্বাসন এলাকা (১০০ ফুট রাস্তার পার্শ্বে), আজিমপুর, রাজারবাগ পুনর্বাসন এলাকা (বিশ্ব রোডের পার্শ্বে), বারিধারা ডিওএইচএস, বসুন্ধরা (ব্লক এ-জি), নিকেতন, চট্টগ্রাম জেলার আগ্রাবাদ, হালিশহর, পাঞ্চলাইশ, নাসিরাবাদ, মেহেদীবাগ
দলিল মূল্যের উপর ৪% অথবা ৯০,০০০/- টাকা এর মধ্যে যাহা বেশি তাহা
০২। ঢাকা জেলার গুলশান, বনানী এবং বারিধারা
দলিল মূল্যের উপর ৪% অথবা ৩,০০,০০০/- টাকা এর মধ্যে যাহা বেশি তাহা
০৩। ঢাকা জেলার ধানমন্ডি
দলিল মূল্যের উপর ৪% অথবা ২,৪০,০০০/- টাকা এর মধ্যে যাহা বেশি তাহা
০৪। ঢাকা জেলার কাকরাইল, সেগুনবাগিচা, বিজয়নগর, ইস্কাটন, গ্রীন রোড, এলিফ্যান্ট রোড, ফকিরাপুল, আরামবাগ, মগবাজার (মূল রাস্তার ১০০ ফুটের মধ্যে হলে), তেজগাঁও শিল্প এলাকা, শেরে-বাংলানগর প্রশাসনিক এলাকা, আগারগাঁও প্রশাসনিক এলাকা, লালমাটিয়া, মহাখালী ডিওএইচএস, ক্যান্টনমেন্ট এবং চট্টগ্রামের খুলশী।
দলিল মূল্যের উপর ৪% অথবা ১,৮০,০০০/- টাকা এর মধ্যে যাহা বেশি তাহা
০৫। ঢাকা জেলার কাকরাইল, সেগুনবাগিচা, বিজয়নগর, ইস্কাটন, গ্রীন রোড এবং এলিফ্যান্ট রোড, (মূল সড়ক হইতে ১০০ ফুটের বাহিরে হইলে)
দলিল মূল্যের উপর ৪% অথবা ১,২০,০০০/- টাকা এর মধ্যে যাহা বেশি তাহা
০৬। ঢাকা জেলার গ্রীন রোড (ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার ৩ হতে ৮ নম্বর রোড)
দলিল মূল্যের উপর ৪% অথবা ২,৪০,০০০/- টাকা এর মধ্যে যাহা বেশি তাহা
০৭। ঢাকা জেলার উত্তরা ( সেক্টর ১০ – ১৪ ), নিকুঞ্জ (দক্ষিণ), নিকুঞ্জ (উত্তর), বাড্ডা পুনর্বাসন এলাকা, গেন্ডারিয়া পুনর্বাসন এলাকা, শ্যামপুর পুনর্বাসন এলাকা, আইজি বাগান পুনর্বাসন এলাকা এবং টংগী শিল্প এলাকা
দলিল মূল্যের উপর ৪% অথবা ৬০,০০০/- টাকা এর মধ্যে যাহা বেশি তাহা
০৮। ঢাকা জেলার শ্যামপুর শিল্প এলাকা, পোস্তগোলা শিল্প এলাকা এবং জুরাইন শিল্প এলাকা
দলিল মূল্যের উপর ৪% অথবা ৪৮,০০০/- টাকা এর মধ্যে যাহা বেশি তাহা
০৯। ঢাকা জেলার খিলগাঁও পুনর্বাসন এলাকা (১০০ ফুট এর কম সড়কের পার্শ্বে) এবং রাজারবাগ পুনর্বাসন এলাকা (৪০ ফুট সড়ক ও অন্যান্য অভ্যন্তরীণ সড়কের পার্শ্বে)
দলিল মূল্যের উপর ৪% অথবা ৭২,০০০/- টাকা এর মধ্যে যাহা বেশি তাহা
১০। ঢাকা জেলার গোড়ান (৪০ ফুট সড়কের পার্শ্বে) এবং হাজারীবাগ ট্যানারী এলাকা
দলিল মূল্যের উপর ৪% অথবা ৩০,০০০/- টাকা এর মধ্যে যাহা বেশি তাহা
তবে শর্ত থাকে যে, যদি ভূমির উপর কোন স্থাপনা, বিল্ডিং, ফ্ল্যাট, এপার্টমেন্ট অথবা ফ্লোর স্পেস বিদ্যমান থাকে তাহা হইলে স্থাপনার উপর প্রতি বর্গমিটার ৬০০ টাকা অথবা স্থাপনা, বিল্ডিং, ফ্যাট, এপার্টমেন্ট অথবা ফ্লোর স্পেস এর মূল্যের উপর ৪%, ইহার মধ্যে যাহা বেশি সেই হারে অতিরিক্ত কর পরিশোধযোগ্য হইবে ।
গ) নিম্নলিখিত এলাকায় অবস্থিত ভূমি অথবা ভূমিসহ বিল্ডিং এর ক্ষেত্রে উৎসে করের হার:
বাণিজ্যিক এলাকার নাম
কাঠা (১.৬৫ শতাংশ) প্রতি করের হার
০১। উপরোল্লিখিত “ক” ও “খ” -তে বর্ণিত এলাকা ব্যতীত রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ(রাজউক) এবং চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) এর অধিভুক্ত এলাকা
দলিল মূল্যের উপর ৪%
০২। গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, নরসিংদী, ঢাকা ও চট্টগ্রাম জেলা (রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা রাজউক এবং চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা সিডিএ ব্যতীত), যেকোন সিটি কর্পোরেশন (ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ব্যতীত) এবং ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড
দলিল মূল্যের উপর ৩%
০৩। জেলা শহরের পৌরসভার অধিভুক্ত এলাকা
দলিল মূল্যের উপর ৩%
০৪। যে কোন পৌরসভার অধিভুক্ত এলাকা
দলিল মূল্যের উপর ২%
০৫। অন্যান্য এলাকা
দলিল মূল্যের উপর ১%
৫। উৎসে আয়কর (53FF): প্রযোজ্য নয়।
৬। মূল্য সংযোজন কর (VAT): প্রযোজ্য নয়।
৭। ই ফিঃ ১০০ টাকা।
৮) এন ফিঃ
(ক) বাংলায় প্রতি ৩০০ শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা উহার অংশ বিশেষের জন্য ১৬ টাকা।
(খ) ইংরেজি ভাষায় প্রতি ৩০০ শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা উহার অংশ বিশেষের জন্য ২৪ টাকা।
৯) এনএন ফি (নকলনবিশগনের পারিশ্রমিক):
(ক) বাংলায় প্রতি ৩০০ শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা উহার অংশ বিশেষের জন্য ২৪ টাকা।
(খ) ইংরেজি ভাষায় প্রতি ৩০০ শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা উহার অংশ বিশেষের জন্য ৩৬ টাকা।
১০) হলফনামাঃ ২০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে হলফনামা প্রিন্ট করে দলিলের সাথে সংযুক্ত করতে হবে।
১১) কোর্ট ফিঃ প্রযোজ্য নয়।
ফিস পরিশোধ পদ্ধতিঃ
দলিল রেজিস্ট্রেশনের জন্য যাবতীয় ফিসাদি স্থানীয় সোনালী ব্যাংক এর ট্রেজারি শাখায় জমা প্রদান করতে হবে।
১। রেজিস্ট্রেশন ফি + ই ফি + এন ফি একসাথে একটি পে-অর্ডারের মাধ্যমে কোড নং ১-২১৬১-০০০০-১৮২৬ তে জমা প্রদান করতে হবে।
২) স্ট্যাম্প শুল্ক (দলিলে ব্যবহৃত স্ট্যাম্প বাদে) পে-অর্ডারের মাধ্যমে কোড নং ১-১১০১-০০২০-১৩১১ তে জমা প্রদান করতে হবে। দলিলে সর্বোচ্চ ১২০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প ব্যবহার করা যাবে।
৩) স্থানীয় সরকার কর সাব-রেজিস্ট্রি অফিস সংলগ্ন NRBC ব্যাংক বুথে জমা প্রদান করতে হব। যেখানে NRBC ব্যাংকের বুথ নেই সেখানে সোনালী ব্যাংকে সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিস্ট্রারের ব্যাংক হিসাবে জমা প্রদান করতে হবে।
৪) উৎসে আয়কর (53H) পে-অর্ডারের মাধ্যমে কোড নং ১-১১৪১-০০০০-০১১১ তে জমা প্রদান করতে হবে।
৫) এনএন ফি নগদে অফিসে জমা প্রদান করতে হবে।
বিশেষ দ্রষ্টব্য
১) The Stamp Act-1899, Rule-5. (Any instrument comprising or relating to several distinct matters shall be chargeable with the aggregate amount of the duties with which separate instruments, each comprising or relating to one of such matters, would be chargeable under this Act.)
না-দাবি (Na-Dabi Deed) বা মুক্তিপত্র (Mukti Potro Deed) দলিল এর রেজিস্ট্রেশন ফিস কত জেনে নিন। Fees of Na-dabi Deed Registration
১। রেজিস্ট্রেশন ফিঃ দলিলে লিখিত মোট মূল্যের ১% টাকা।
২। স্ট্যাম্প শুল্কঃ দলিলে লিখিত দাবীর অর্থ বা মূল্য ২,০০০ টাকার অধিক না হলে ৫০ টাকা। অন্যান্য ক্ষেত্রে – ২০০ টাকা।
৩। স্থানীয় সরকার করঃ দলিলে লিখিত মোট মূল্যের ৩% টাকা তবে সিটি কর্পোরেশন এবং ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড (উপজেলাধীন নয়) এর অধীন সম্পত্তি হলে হস্তান্তরিত সম্পত্তির দলিলে লিখিত মোট মূল্যের ২% টাকা।
৪। উৎসে আয়কর (53H): শর্ত সাপেক্ষে প্রযোজ্য।
৫। উৎসে আয়কর (53FF): প্রযোজ্য নয়।
৬। মূল্য সংযোজন কর (VAT): প্রযোজ্য নয়।
৭। ই ফিঃ ১০০ টাকা।
৮) এন ফিঃ
(ক) বাংলায় প্রতি ৩০০ শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা উহার অংশ বিশেষের জন্য ১৬ টাকা।
(খ) ইংরেজি ভাষায় প্রতি ৩০০ শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা উহার অংশ বিশেষের জন্য ২৪ টাকা।
৯) এনএন ফি (নকলনবিশগনের পারিশ্রমিক):
(ক) বাংলায় প্রতি ৩০০ শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা উহার অংশ বিশেষের জন্য ২৪ টাকা।
(খ) ইংরেজি ভাষায় প্রতি ৩০০ শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা উহার অংশ বিশেষের জন্য ৩৬ টাকা।
১০) হলফনামাঃ ২০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে হলফনামা প্রিন্ট করে দলিলের সাথে সংযুক্ত করতে হবে।
১১) কোর্ট ফিঃ সম্পত্তি হস্তান্তর (এল. টি) নোটিশের আবেদনপত্রে ১০ টাকা মূল্যের কোর্ট ফি সংযুক্ত করতে হবে।
ফিস পরিশোধ পদ্ধতিঃ
দলিল রেজিস্ট্রেশনের জন্য যাবতীয় ফিসাদি স্থানীয় সোনালী ব্যাংক এর ট্রেজারি শাখায় জমা প্রদান করতে হবে।
১। রেজিস্ট্রেশন ফি + ই ফি + এন ফি একসাথে একটি পে-অর্ডারের মাধ্যমে কোড নং ১-২১৬১-০০০০-১৮২৬ তে জমা প্রদান করতে হবে।
২) স্ট্যাম্প শুল্ক (দলিলে ব্যবহৃত স্ট্যাম্প বাদে) পে-অর্ডারের মাধ্যমে কোড নং ১-১১০১-০০২০-১৩১১ তে জমা প্রদান করতে হবে। দলিলে সর্বোচ্চ ১২০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প ব্যবহার করা যাবে।
৩) স্থানীয় সরকার কর সাব-রেজিস্ট্রি অফিস সংলগ্ন NRBC ব্যাংক বুথে জমা প্রদান করতে হব। যেখানে NRBC ব্যাংকের বুথ নেই সেখানে সোনালী ব্যাংকে সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিস্ট্রারের ব্যাংক হিসাবে জমা প্রদান করতে হবে।
৪) এনএন ফি নগদে অফিসে জমা প্রদান করতে হবে।
বিশেষ দ্রষ্টব্য
১) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, গত ০৯/০৭/২০১৪ খ্রিস্টাব্দ তারিখের নথি নং ০৮.০১.০০০০.০৩০.০৩.০০৮.২০১৪/৫৬ স্মারকে প্রচারিত পরিপত্র নং-১ (আয়কর) এর মাধ্যমে আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ধারা ‘৫৩এইচ’ এর স্পষ্টীকরণ বিষয়ে উক্ত পরিপত্রের ‘জ’ নং ক্রমিকে বলা হয়েছে, “না-দাবি দলিল হস্তান্তর দলিল নয় বিধায় না-দাবি দলিলের মাধ্যমে রেকর্ড সংশোধনের ক্ষেত্রে উক্ত দলিল রেজিস্ট্রেশনের সময় ‘৫৩এইচ’ ধারার কর প্রযোজ্য হবে না।”
২) The Stamp Act-1899, Rule-5. (Any instrument comprising or relating to several distinct matters shall be chargeable with the aggregate amount of the duties with which separate instruments, each comprising or relating to one of such matters, would be chargeable under this Act.)
একটি হস্তান্তর দলিল তৈরি করার জন্য যে সকল তথ্য প্রয়োজন। Documents Required For Deed Registration। সাব রেজিস্ট্রি অফিসে যে কেন প্রকার দলিল রেজিস্ট্রশন করতে গেলে কমনভাবে নিচের ডকুমেন্টস গুলো প্রয়োজন হয়।
১। বিক্রেতার নাম, পিতার নাম, মাতার নাম, জন্ম তারিখ, ধর্ম, পেশা, জাতীয় পরিচয়পত্র/ জন্ম সনদ নম্বর ও ঠিকানা।
২। ক্রেতার নাম, পিতার নাম, মাতার নাম, জন্ম তারিখ, ধর্ম, পেশা, জাতীয় পরিচয়পত্র/ জন্ম সনদ নম্বর ও ঠিকানা।
৩। হস্তান্তরাধীন সম্পত্তির নূন্যপক্ষে ২৫ বছরের মালিকানার ধারাবাহিক বিবরণ।
দলিল রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম ও ধাপসমূহ। Deed Registration in Bangladesh নিয়ে আমাদের আজকের পর্ব।
রেজিস্ট্রেশন আইন, ১৯০৮ এর ধারা ১৭ অনুসারে বিক্রয়, হস্তান্তর, দান বা ইজারা দেওয়ার উদ্দেশ্যে একটি সম্পত্তি নিবন্ধিত করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। দলিলের নিবন্ধন আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করে।
দলিল রেজিস্ট্রেশন করার ধাপসমূহ ধারাবাহিক ভাবে তুলে ধরা হলোঃ
‘ক’ একখন্ড জমি বা একটি দোকান বা ফ্ল্যাট বা প্লট ‘খ’ এর নিকট বিক্রয় করেছে। নিবন্ধন আইনের বিধান অনুযায়ী এই বিক্রয়ের দলিল নিবন্ধন করা বাধ্যতামূলক। এক্ষেত্রে ‘ক’ বিক্রেতা আর ‘খ’ হল ক্রেতা। বিশেষত তার স্বার্থেই দলিল প্রস্তুত করা হয়ে থাকে এবং সেটি সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে উপস্থাপনের মাধ্যমে নিবন্ধন করতে হয়। দলিল নিবন্ধনের ধাপ-ওয়ারি কার্যক্রম নিম্নে বর্ণিত হলঃ
ধাপ-১ঃ
বিক্রয় দলিল নিবন্ধনের প্রথম ধাপে একজন ক্রেতার দায়িত্ব হলো হস্তান্তরিত সম্পত্তির স্বত্ব এবং গত ২৫ বৎসরে হস্তান্তরের তথ্য যাচাই করা। একটি সম্পত্তির পূর্ববর্তী ধারাবাহিক মালিকানারা ইতিহাস যাচাই করার জন্য ক্রেতার নিকট থেকে সকল বায়া দলিল ও খতিয়ানের কপি চেয়ে নিতে হবে এবং তা সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিস্ট্রি অফিস এবং খতিয়ান সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিস থেকে যাচাই করে নিতে হবে। এই ধাপে তল্লাশকারক/দলিল লেখকের সহায়তা নিইয়ে উক্ত জমির হস্তান্তর সম্পর্কিত তথ্য সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে তল্লাশ করতে হবে।
ধাপ-২ঃ
আলোচ্য হস্তান্তরের প্রয়োজনীয় কাগজ-পত্র সংগ্রহ, যথা: (ক) বিক্রেতা বা তার পূর্ববর্তীর নামে সর্বশেষ খতিয়ান; (খ) ক্রেতা ও বিক্রেতার পাসপোর্ট আকারের ছবি; (গ) জমিটি সরকারি কোন কর্তৃপক্ষের অধীনস্ত থাকলে উক্ত কর্তৃপক্ষের অনুমতি বা ছাড়পত্র ইত্যাদি। সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রি অফিস এবং ভূমি অফিসে আবেদনের মাধ্যমে উক্ত কাগজ-পত্র সংগ্রহ করা যাবে।
ধাপ-৩ঃ
(ক) দলিলের খসড়া প্রস্তুতকরণ এবং (খ) প্রয়োজনীয় সংশোধনের পর খসড়া দৃষ্টে স্ট্যাম্প কাগজে পরিচ্ছন্ন আকারে দলিল প্রস্তুতকরণ। হস্তান্তরিত সম্পত্তির বায়া দলিল ও অন্যান্য কাগজ-পত্র দৃষ্টে দলিলের খসড়া প্রস্তুত করতে হবে। বিক্রেতা/দাতা স্বয়ং বা ক্রেতা কর্তৃক নিয়োজিত আইনজীবী বা দলিল লেখক।
ধাপ-৪ঃ
দলিল নিবন্ধন বাবদ ফি ও শুল্ক, যথা: (ক) রেজিঃ ফি, (খ) স্থনীয় কর, (গ) স্ট্যাম্প শুল্ক; (ঘ) উৎসে কর এবং (ঙ) ভ্যাট (বিক্রেতা ভূমি বা ভবন উন্নয়নকারী হলে) জমাকরণ। (ক) হতে (ঘ) পে অর্ডারের মাধ্যমে এবং (ঙ) চালানের মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখায়।
ধাপ-৫ঃ
(ক) দলিল সম্পাদন এবং (খ) সম্পাদনের ৩ মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে নিবন্ধনের জন্য মূল পে-অর্ডার, চালান ও অন্যান্য কাগজ-পত্র সহকারে দলিল দাখিল। (ক) বিক্রেতা কর্তৃক দলিলে স্বাক্ষর বা টিপ প্রদানের মাধ্যমে সম্পাদন; (খ) সাব-রেজিস্ট্রি অফিস।
ধাপ-৬ঃ
সাব-রেজিস্ট্রার কর্তৃক দলিল সম্পাদনকারী এবং তার সনাক্তকারীর পরিচিতি এবং দাখিলকৃত কাগজ-পত্রের বৈধতা যাচাইকরণ।
(ক) সঠিক পাওয়া গেলে পে-অর্ডার, চালানসহ রেজিস্ট্রির জন্য দলিল গ্রহণ; এবং (খ) অন্যথা হলে ভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ।
(ক) দলিল সম্পাদনকারী ও তার সনাক্তকারীর স্বাক্ষর; সরকারি বইয়ে টিপ গ্রহণ এবং দলিল দাখিলকারীকে রসিদ প্রদান; এবং অন্যথা হলে (খ) দলিল নিবন্ধন অগ্রাহ্যের আদেশ প্রদান।
ধাপ-৭ঃ
দলিলটি নিবন্ধনের জন্য গৃহীত হলে দলিলের বিপরীতে অফিস কর্তৃক প্রদত্ত রসিদটি ক্রেতা রেখে দিবেন এবং নির্দিষ্ট সময় পর রসিদ দাখিল করে মূল দলিলটি ফেরত নিবেন।
ধাপ-৮ঃ
দলিলটির নিবন্ধন অগ্রাহ্য হলে ক্রেতা মূল দলিল এবং অগ্রাহ্য আদেশের নকল সংগ্রহ করবেন।
ধাপ-৯ঃ
অগ্রাহ্য আদেশ প্রদানের ৩০ দিনের মধ্যে ক্রেতা অগ্রাহ্য আদেশের নকলসহ মূল দলিল জেলা রেজিস্ট্রার বরাবর দাখিল করে আপিল মামলা দায়ের করবেন।
(১) ক্রেতা কর্তৃক নিয়োজিত আইনজীবী; (২) জেলা রেজিস্ট্রারের অফিস।
ধাপ-১০ঃ
দলিলটি নিবন্ধনেরজন্য আদেশ দেয়া হলে তা সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে নিবন্ধিত হবে; অথবা দলিলটি নিবন্ধনের আবেদন আপিলকারী কর্তৃপক্ষ (জেলা রেজিস্ট্রার) কর্তৃক প্রত্যাখাত হলে ক্রেতা প্রতিকারের নিমিত্ত দেওয়ানি আদালতের আশ্রয় গ্রহণ করতে পারেন। জেলা রেজিস্ট্রার কর্তৃক নিবন্ধন আইনের অধীন তদন্ত বা শুনানি সম্পন্নকরণ।